কোয়ান্টামের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে শততম আজীবন রক্তদাতা সন্মাননা দেওয়া হয়

 

ঢাকা, ১৬ নভেম্বর,  প্রেস বিজ্ঞপ্তি : গত শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে কোয়ান্টাম স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে আয়োজিত শততম আজীবন রক্তদাতা সন্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. গোলাম হোসেন বলেন, আজকে আমরা যাদের সামনে বসে আছি পর্দার আড়ালে তাদের নিরলস প্রচেষ্টাই সম্ভব করেছে রক্তদাতা সম্মাননা অনুষ্ঠানের এই ১০০তম মাইলফলক স্পর্শ করতে। রক্ত পাওয়া মানুষের অধিকার। এই অধিকার বাস্তবায়নের গুরুদায়িত্ব রাষ্ট্রের হলেও কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে ।

তিনি আরো বলেন, সচেতনতার অভাব থেকেই রক্তদান ও তার সরবরাহের অভাব তৈরী হয়। আমাদের দেশে ১৮-৬০ বছর বয়সী জনসংখ্যা আট কোটি হওয়া সত্বেয়ও বছরে ছয় লক্ষ ব্যাগ রক্তের চাহিদা পূরণে অভাব দেখা দেয় যা আদৌ সমীচিন নয়। অনেকে টাকার বিনিময়ে নেশাগ্রস্থ লোকদের কাছ থেকে রক্ত নিয়ে বিপদে পড়ছেন যা খুবই দুঃখজনক। আমাদের দেশের সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, মানুষ যতটুকু কাজ করে তার বেশী স্বীকৃতি পেতে চায়। কিন্তু কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন এই স্বীকৃতির অত্যাচার থেকে বেরিয়ে এসে নিরবে কাজ করে যাচ্ছে। কোনো বিদেশী রাষ্ট্রের উপর ভরসা না করে স্ব-উদ্যোগে, স্ব-অর্থায়নে ও স্ব-পরিকল্পনায় তাদের এই কার্যক্রম খুবই প্রশংসার দাবি রাখে। এছাড়া রক্তদানের মাধ্যমে সুস্বাস্থ্যের গতিকে ত্বরান্বিত করে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন সচেতনতা তৈরির মত মহান কাজও সম্পাদন করছে । তিনি বলেন, প্রত্যেকে বছরে একবার করে রক্ত দিলেও রক্তের স্বল্পতা থাকার কথা নয়। বরং রক্ত বিদেশে সরবরাহ করার মত অবস্থা তৈরী হবে । আমি এমনও মানুষ দেখেছি যিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার সময় রক্তদাতাকে সাথে করে নিয়ে গেছেন যা বহির্বিশ্বে রক্তের মহামূল্যবান চাহিদা ও ব্যয়কে নির্দেশ করে। আসুন আমরা স্লোগান দিই, ‘পেশাজীবি অনিরাপদ রক্তদাতাদের স্থলে আমরাই এগিয়ে এসে রক্ত দিব।’

৭ বারের স্বেচ্ছা রক্তদাতা আফিয়া জেরিন বলেন, তিনি নিয়মিত রক্ত দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমরা শুনেছি মৃতপ্রায় কুকুরকে পানি পান করিয়ে একজন পতিতা যদি বেহেস্তে যেতে পারে, তবে সৃষ্টির সেরা মানুষকে রক্ত দিয়ে বাঁচিয়ে আমরাও সৃষ্টিকর্তার কাছে বেহেস্ত প্রত্যাশা করতে পারি। কোয়ান্টাম ল্যাব থেকে নিয়মিত রক্তগ্রহণকারী থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত সুমি আক্তার বলেন, তার জীবন সচল আছে রক্তদাতাদের দানে। তিনি সবাইকে রক্ত দানে বিরত না হতে অনুরোধ করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এবিএম ইউনুস।।
সম্মাননা অনুষ্ঠানে যারা কমপক্ষে তিনবার রক্ত দিয়েছেন এমন ১৭৪ জন স্বেচ্ছা রক্তদাতাকে সিরামিক্সের সুদৃশ্য ক্রেস্টসহ সার্টিফিকেট ও বিশেষ আইডি কার্ড দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কোয়ান্টাম স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক মাদাম নাহার আল বোখারী।