২০২৬ সালে বাংলাদেশের রপ্তানি হবে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার: ওকাবের মিট দ্যা প্রেসে বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, এমপি বলেছেন, বাংলাদেশ এলডিসি গ্রাজুয়েশন করে উন্নয়নশীল দেশে পরিনত হয়েছে। ২০২৬ সালে তা কার্যকর হবে, এরপর আরও তিন ব ছর পর অর্থাৎ ২০২৯ সাল থেকে এলডিসিভুক্ত দেশের বাণিজ্য সুবিধা আর থাকবে না বাংলাদেশের। তখন থেকে উন্নতদেশের সাথে প্রতিযোগিতা করেই বিশ্ববাণিজ্য করতে হবে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে রপ্তানি বাণিজ্যের এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য কাজ শুরু করে দিয়েছে। আমরা ভূটানের সাথে অগ্রাধিকার মূলক বাণিজ্য চুক্তি করেছি। আরও বেশ কয়েকটি দেশের সাথে পিটিএ বা এফটিএ এর মতো বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের জন্য গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা চলছে। শিল্পের যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানির কারনে  চায়না এবং ভারতের সাথে আমাদের বাণিজ্য ব্যাবধান সবচেয়ে বেশি। চায়না বাণিজ্য ব্যাবধান কমাতে ৯৯ ভাগ পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছে। ভারতের সাথে বাংলাদেশ সেপা চুক্তি করার জন্য কাজ করছে। দেশের অর্থনীতির ভিত্তি শক্ত রাখার জন্য রপ্তানি বৃদ্ধির বিকল্প নেই। বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, গত বছর প্রায় ৬০ বিলিয়ন রপ্তানি হয়েছে। ২০২৪ সালে ৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০২৬ সালে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। বর্তমানে আমাদের তৈরী পোশাক খাতে মোট রপ্তানির প্রায় ৮২ ভাগ অবদান  রাখছে। পাশাপাশি আইসিটি, লেদার, প্লাস্টিক, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, পাটসহ প্রায় ১০টি পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধির বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এগুলোর রপ্তানি দিনদিন বাড়ছে। তৈরী পোশাক রপ্তানিতে আমাদের আরও সম্ভাবনা রয়েছে। মিয়ানমার বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিযোগি ছিল, তাদের তৈরী পোশাক খাত প্রায় বন্ধ। চায়না তৈরী পোশাক শিল্প রিলোকেট করছে। ফলে আমাদের সম্ভাবনা আরও বেড়ে গেছে। আমাদের দক্ষ জনশক্তি রয়েছে, উৎপাদন খরচ কম। তৈরী পোশাক শিল্পে গ্রীণ ফ্যাক্টরি এখন বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি। ফলে রপ্তানি বাণিজ্যে আমাদের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।  

বাণিজ্যমন্ত্রী আজ (১৭ সেপ্টম্বর) ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের  আকরাম খাঁ মিলনায়তনে ওভারসিস করেসপনডেন্ট অফ বাংলাদেশ (ওকাব) আয়োজিত মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে বক্তৃতা প্রদানের সময় এসব কথা বলেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর সফল হয়েছে। ভূটান ও নেপালের সাথে সড়ক পথের ফ্রি ট্রানজিট সুবিধা দিতে সম্মত হয়েছে ভারত। ভারতের সাথে সড়ক, নৌ এবং আকাশ পথে ব্যবসা বাণিজ্য বৃদ্ধির সুযোগ বাড়ছে, যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক উন্নত হচ্ছে, নদীর পানি বন্টন সবমিরিয়ে ৭টি চুক্তি হয়েছে। এতে করে বাংলাদেশ অনেক লাভবান হবে। ভারত বাংলাদেশের তিনটি স্পেশাল ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগ করছে, আরও চাইলে বাংলাদেশ বিবেচনা করবে। বাংলাদেশের সাথে ভারতের বিদ্যমান সমস্যাগুলো আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের প্রক্রিয়া চলছে। তিনি বলেন, ডিমের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি সরকার পর্যবেক্ষণ করছে। ডিম আমদানির বিষয়েটি দেশীয় শিল্পকে সুরক্ষা দিয়ে প্রয়োজনে বিবেচনা করা হবে। বাংলাপদেশ একসময় সুই, সুতা, বোতাম, কার্টুনসহ সকল এক্সরেসরিজ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করে তৈরী পোশাক বিদেশে রপ্তানি করতো, আজ বাংলাদেশে অভ্যন্তরিন চাহিদা পূরণ করে বিদেশে গার্মেন্টস এক্সরেসরিজ রপ্তানি করছে। আমাদের সক্ষমতা আছে, এগুলোকে কাজে লাগাতে হবে।

ওভারসিস করেসপনডেন্ট অফ বাংলাদেশ (ওকাব) এর আহবায়ক কমিটির আহবায়ক কাদির কল্লোল, সদস্য-সচিব নজরুল ইসলাম মিঠু এবং ওকাবের সিনিয়র সদস্য ফরিদ হোসেনসহ সিনিয়র সাংবাদিকগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা ঃ ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২.