এবার খসড়া “টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক ও লাইসেন্সিং নীতিমালায়” ফাইবার অ্যাট হোমের আপত্তি

এবার খসড়া “টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক ও লাইসেন্সিং নীতিমালায়”আপত্তি জানাল দেশের শীর্ষ নেটওয়ার্ক অপারেটর ফাইবার অ্যাট হোম। আজ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে ফাইবার অ্যাট হোমের চেয়ারম্যান মইনুল হক সিদ্দিকী তাঁদের এই আপত্তির কথা জানিয়ে বলেন, “এই নীতিমালা বাস্তবায়িত হলে নেশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন) অপারেটরসহ এই খাত সংশ্লিষ্ট দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলির হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে।” রাজধানীর রাওয়া কমপ্লেক্সে টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (টিআরএনবি) আয়োজিত একটি কর্মশালা পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছরে এনটিটিএন অপারেটররা ৪০০ থেকে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। “সারাদেশ শক্তিশালী প্রায় দুই লাখ কিলোমিটার ফাইবার বসানো হয়েছে। অথচ নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রস্তাবিত নেটওয়ার্ক টপোলজি বাস্তবায়িত হলে এই খাতে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলির বিনিয়োগ পুরোপুরি ঝুঁকিতে পড়বে,” তিনি জানান।
ফাইবার অ্যাট হোমের চেয়ারম্যানের ভাষ্য মতে, “এরপর ছোট অপারেটর যারা আছে, আইএসপি যারা আছে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অনেক মানুষ বেকার হয়ে যাবে, এখানে যে বিনিয়োগটা আছে সেটাও নষ্ট হবে।।” মইনুল হক সিদ্দিকী দেশীয় বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ সুরক্ষিত রাখার আহ্বান জানান।

টিআরএনবি’র সভাপতি সমীর কুমার দে’র সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে অন্যানের মধ্যে বক্তব্য দেন ফাইবার অ্যাট হোমের সিইও আজাদ চৌধুরী, চিফ ইনফরমেশন অফিসার সুমন আহমেদ সাবির, চিফ গভর্মেন্ট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার আব্বাস ফারুক। “টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক ও লাইসেন্সিং নীতিমালা: কোন পথে এনটিটিএন এর ভবিষ্যৎ” শীর্ষক এ কর্মশালার আয়োজন করে টিআরএনবি।
সাবির বলেন, “প্রস্তাবিত খসড়া ভাষার মার‌প্যাচে মোবাইল অপারেটরেরা সবই করতে পারবে। অপারেটরেরা অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ে সেবা দেয় তাহলে ইন্টারনেট সার্ভিস অপারেটরদের ব্যবসা বিপন্ন হবে। এখানে স্পষ্ট করে উল্লেখ থাকা উচিত যে, মোবাইল অপারেটরেরা অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ করতে পারবে না।”

নিরবচ্ছিন্ন সেবার জন্য এনটিটিএন দেশব্যাপী ফাইবার অপটিক্যাল অবকাঠামো নিশ্চিত করেছে বলে জানান আব্বাস ফারুক। তিনি বলেন, “ট্রান্সমিশন ব্যান্ডউইথের মূল্য এখন পর্যন্ত ৯৮ শতাংশ কমানো হয়েছে, যে কারণে এনটিটিএন সেবা এখন দেশের প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী হয়েছে।“অতি সম্প্রতি বিটিআরসির নির্দেশনা মেনে বর্তমান বাজার মূল্যের সঙ্গে আরও ১৫ শতাংশ দাম কমানো হয়েছে,” বলেন আব্বাস ফারুক।
সম্প্রতি বিটিআরসি নতুন নেটওয়ার্ক ও লাইসেন্স নীতিমালার খসড়া প্রকাশ করার পর থেকে এ নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছে এ খাতের বিভিন্ন স্তরে থাকা দেশি কোম্পানিগুলো। দেশের আইজিডব্লিউ অপারেটরদের সংগঠন আন্তর্জাতিক গেটওয়ে অপারেটরস ফোরাম (আইওএফ) রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে খসড়া এ নীতিমালার বিরোধিতা করেন। তাদের ভাষ্য, সরকারের নতুন লাইসেন্সিং নীতিমালা বাস্তবায়িত হলে এর মধ্যস্তরে থাকা দেশি কোম্পানিগুলোর অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।