এনজিওদের জন্য মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ সংক্রান্ত গাইডলাইন্স জারী।

ঢাকা, ২৫ নভেম্বর, প্রেস বিজ্ঞপ্তি (বাংলাদেশ ব্যাংক )মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এবং সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯ (সংশোধনীসহ) এর বিধানাবলী বাংলাদেশে কার্যরত এনজিওসমূহ কর্তৃক পরিপালনের সুবিধার্থে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ২০ নভেম্বর, ২০১৩ তারিখে বিএফআইইউ সার্কুলার ০৯ এর মাধ্যমে এনজিও সেক্টরে মানিলন্ডারিং এবং সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ বিষয়ক গাইডলাইন্স (এঁরফবষরহবং ড়হ চৎবাবহঃরড়হ ড়ভ গড়হবু খধঁহফবৎরহম ধহফ ঞবৎৎড়ৎরংঃ ঋরহধহপরহম ভড়ৎ ঘচঙ/ঘএঙ ঝবপঃড়ৎ) জারী করা হয়েছে। এনজিও সেক্টরকে মানিলন্ডারিং এবং সন্ত্রাসে অর্থায়নের কাজে অপব্যবহার হতে রক্ষা করার জন্য এই গাইডলাইন্স জারী করা হয়েছে।
বিগত ২০০৮ সালে বাংলাদেশের মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ সক্ষমতা যাচাই করার নিমিত্তে অংরধ চধপরভরপ এৎড়ঁঢ় ড়হ গড়হবু খধঁহফবৎরহম কর্তৃক গঁঃঁধষ ঊাধষঁধঃরড়হ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। উক্ত পর্যালোচনায় মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বাংলাদেশের সক্ষমতায় উল্লেখযোগ্য ঘাটতি পরিলক্ষিত হওয়ার দরুন বাংলাদেশ কে মানিলন্ডারিং ও টেরোরিস্ট ফাইন্যান্সিং প্রতিরোধে বিশ্বের সর্বোচ্চ সংস্থা ঋরহধহপরধষ অপঃরড়হ ঞধংশ ঋড়ৎপব (ঋঅঞঋ) কর্তৃক তাদের ধুসর (গ্রে), গাঢ় ধুসর ও কালো তালিকার মধ্যে ধুসর (গ্রে) তালিকাভুক্ত করা হয়।
এপ্রেক্ষিতে মাননীয় অর্থমন্ত্রী মহোদয় বিগত ২০১০ সালে বাংলাদেশে মানিলন্ডারিং ও টেরোরিস্ট ফাইন্যান্সিং প্রতিরোধে সক্ষম একটি কার্যকর আইন ও অবকাঠামো গড়ে তোলার নিমিত্তে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ঋরহধহপরধষ অপঃরড়হ ঞধংশ ঋড়ৎপব (ঋঅঞঋ) এর সভাপতি বরাবরে লিখিত প্রতিশ্রুতিসহ এ্যাকশন প্লান প্রেরণ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন সংক্রান্ত দেশে প্রচলিত আইনসমূহ আন্তর্জাতিক মানসম্মত করা হয় এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এবং সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯ (সংশোধনীসহ) এ এনজিওসমূহকে রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থা হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা হয়।
উপরিউক্ত আইনদ্বয় অনুসারে অলাভজনক সংস্থা/প্রতিষ্ঠান (ঘড়হ চৎড়ভরঃ ঙৎমধহরংধঃরড়হ) বলতে কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ এর ধারা ২৮ এর অধীন সনদ প্রাপ্ত কোন প্রতিষ্ঠানকে বুঝায় এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (ঘড়হ এড়াবৎহসবহঃ ঙৎমধহরংধঃরড়হ) বলতে ঝড়পরবঃরবং জবমরংঃৎধঃরড়হ অপঃ, ১৮৬০; ঠড়ষঁহঃধৎু ঝড়পরধষ ডবষভধৎব অমবহপরবং (জবমরংঃৎধঃরড়হ ধহফ ঈড়হঃৎড়ষ) ঙৎফরহধহপব, ১৯৬১; ঋড়ৎবরমহ উড়হধঃরড়হং (ঠড়ষঁহঃধৎু অপঃরারঃরবং) জবমঁষধঃরড়হ ঙৎফরহধহপব, ১৯৭৮; ঋড়ৎবরমহ ঈড়হঃৎরনঁঃরড়হং জবমঁষধঃরড়হ ঙৎফরহধহপব, ১৯৮২ এবং মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটি আইন, ২০০৬ এর আওতায় নিবন্ধন প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানকে বুঝায়।
গাইডলাইন্সটি জারী করার পূর্বে স্টেকহোল্ডারদের মতামত গ্রহণের জন্য বাংলাদেশে কার্যরত আন্তর্জাতিক এনজিওদের প্রধান নির্বাহীদের ২০/০৫/২০১৩ তারিখের সভায় গাইডলাইন্সের বিভিন্ন দিক উপস্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে বিস্তারিত মতামত সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন এনজিও এবং তাদের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা, যথা সমাজসেবা অধিদপ্তর, এনজিও এ্যাফেয়ার্স ব্যুরো এবং মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটি এর প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ তারিখে বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়। ২১-২৪ অক্টোবর, ২০১৩ তারিখে বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমীতে এনজিও কর্মকর্তাদের জন্য আয়োজিত প্রশিক্ষণ কর্মসূচীতেও গাইডলাইন্স নিয়ে আলোচনা করা হয়। গাইডলাইন্সটি বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েব সাইট (যঃঃঢ়://িি.িনন.ড়ৎম.নফ/ধনড়ঁঃঁং/ৎবমঁষধঃরড়হমঁরফবষরহব /মঁরফবষরংঃ.ঢ়যঢ়) হতে ডাউনলোড করা যাবে।
মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে এনজিওসমূহের করণীয় বিষয়াবলীর সার-সংক্ষেপ নি¤œরূপঃ
১) প্রত্যেক এনজিওকে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ বিষয়ক নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
২) একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে এই বিষয়ক পরিপালনের জন্য দায়িত্ব প্রদান করতে হবে এবং প্রধান কার্যালয়ে পরিপালন ইউনিট গঠন করতে হবে।
৩) এনজিওকে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়নের ঝুঁকি নির্ধারণ করতে হবে এবং সে অনুসারে প্রতিরোধ বিষয়ক কর্মসূচী নিতে হবে।
৪) কতিপয় বড় গ্রাহক/সুবিধাভোগীদের (ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান) পুর্ণাঙ্গ পরিচিতি ও অর্থনৈতিক লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ ও পাঁচ বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে হবে। এনজিওকে তার পরিচালক/উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে হবে। কর্মী নিয়োগের পূর্বে/পরে তার পরিচিত মূলক ও পূর্ব কর্মকান্ড সম্পর্কিত তথ্য যাচাই করতে হবে।
৫) দাতা এনজিওকে তার সহযোগী এনজিও সম্পর্কিত পুর্ণাঙ্গ তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।
৬) ব্যাংকের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন সম্পাদন করতে হবে। দেশী এনজিও এর বিদেশে কার্যক্রমের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
৭) এবিষয়ে ন্যুনতমপক্ষে প্রতি ত্রৈমাসিকে একটি সভা আয়োজন করতে হবে এবং কর্মকর্তাদেরকে এবিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে।
৮) জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক নিষিদ্ধ ব্যক্তি/সংগঠন হতে কোন তহবিল গ্রহণ করা যাবে না।
৯) এনজিও কর্তৃক তার গ্রাহকদের মানিলন্ডারিং বা সন্ত্রাসে অর্থায়ন বিষয়ক কোন সন্দেহজনক লেনদেন (এসটিআর) পরিলক্ষিত হলে অবিলম্বে অত্র ইউনিটের মহাব্যবস্থাপক বরাবরে প্রেরণ করতে হবে। কোন এনজিও এর সন্দেহজনক লেনদেন পরিলক্ষিত হলে যেকোন ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অত্র ইউনিটে এসটিআর প্রেরণ করা যাবে। বিএফআইইউ কর্তৃক এসটিআর বিষয়ে সর্বোচ্চ গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়।