বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর বাণী

ঢাকা, ৮ ডিসেম্বর, (এনএসনিউজওয়্যার) — রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও বেগম রোকেয়া দিবস উদ্যাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বেগম রোকেয়া দিবস ও পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে এ বছর যারা নারী ও সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য ‘বেগম রোকেয়া পদক’ পেলেন আমি তাদেরকে অভিনন্দন জানাই।
নারী জাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন দেশে নারী শিক্ষা প্রসারে যে ঐতিহাসিক অবদান রেখে গেছেন তা চিরস্মরণীয়। নারীর ভাগ্যোন্নয়নে শিক্ষা ও স্বাবলম্বিতা যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তা তিনি দূরদর্শিতার সাথে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। তিনি শক্তিশালী লেখনীর মধ্য দিয়ে নারী সমাজকে অধিকতর সচেতন করতে প্রয়াসী হন। বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে নতুন শতাব্দীতে নারী-পুরুষের বৈষম্যহীন শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান প্রতিষ্ঠায় আমি সকলকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি। বেগম রোকেয়ার আদর্শ ও অনুপ্রেরণায় এদেশে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নারীর সমঅধিকার প্রতিষ্ঠাসহ সমাজের সকলস্তরে নারীর ক্ষমতায়নের পথ সুগম হবে, এদেশের নারী সমাজ উন্নয়নের সংগ্রামে আরো এগিয়ে যাবে-এই প্রত্যাশা করি।
মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়ার স্মৃতির প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাই এবং বেগম রোকেয়া দিবস ২০১৩ উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করি।

খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”

প্রধানমন্ত্রীর বাণী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“বেগম রোকেয়া দিবস ২০১৩ উপলক্ষে নারী জাগরণের অগ্রদূত মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন এর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।

ঊনবিংশ শতাব্দীর কুসংস্কারাচ্ছন্ন রক্ষণশীল সমাজের শৃঙ্খল ভেঙ্গে বেগম রোকেয়া নারী জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দেন শিক্ষার আলো। তিনি তাঁর ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে নারীর প্রতি সমাজের অন্যায় ও বৈষম্যমূলক আচরণের মূলে আঘাত হানেন। তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনসহ বিভিন্ন সমাজ উন্নয়নমূলক কাজের মধ্য দিয়ে পশ্চাৎপদ নারী সমাজকে আলোর পথ দেখান। তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রভূত অবদান রাখেন।

আমরা সমাজের সর্বস্তরে নারীর সমানাধিকার নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। গত পাঁচবছরে সরকার দেশের নারী উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১ ও পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন ২০১০ প্রণয়ন করা হয়েছে। নারী শিক্ষা প্রসারে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের শিক্ষা অবৈতনিক করা হয়েছে। উপবৃত্তি, বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ এবং অবৈতনিক শিক্ষা প্রদানের ফলে নারী শিক্ষার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। স্কুল থেকে শিশু ঝরেপড়ার হার হ্রাস পেয়েছে। ছাত্রীদের স্কুলে ভর্তির হার শতভাগ নিশ্চিত হয়েছে। নারীর দক্ষতা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান, উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠা, শ্রমবাজারে ব্যাপক অংশগ্রহণ ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করতে এবং নারীর প্রতি সামাজিক অপরাধ রোধে ব্যাপক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিচার বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ ও আইন সভা প্রতিটি ক্ষেত্রেই নারীর বলিষ্ঠ অবস্থান নিশ্চিত করা হয়েছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেত্রী, স্পিকার, মন্ত্রী, হুইপ, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, রাষ্ট্রদূত, বিচারপতি, সচিব, সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী এবং পুলিশ ও আনসার বাহিনীর বিভিন্ন পদে নারীরা সাফল্যের সাথে কাজ করছেন। নারীদের এই উন্নতি বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন ও আদর্শ বাস্তবায়নেরই সফল ধারাবাহিকতা।

বেগম রোকেয়ার কর্মময় জীবন ও তাঁর আদর্শ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে এদেশের নারীসমাজ আরও সামনে এগিয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বেগম রোকেয়া দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচি এবং বেগম রোকেয়া পদক ২০১৩ বিতরণ অনুষ্ঠানের সার্বিক সাফল্য কামনা করি।
বিকাল পাঁচটার আগে প্রচার বা প্রকাশ করা যাবে না
তথ্যবিবরণী