যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত “দুটি নতুন খনি উন্নয়নের সম্ভাব্যতা যাচাই – গচ্চা ১২০ কোটি টাকা!” সংক্রান্ত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে মজুমদার এন্টারপ্রাইজ

দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার ২৩ আগস্ট (বুধবার) প্রথম পাতায় ৪ কলামের লিড
“দুটি নতুন খনি উন্নয়নের সম্ভাব্যতা যাচাই – গচ্চা ১২০ কোটি টাকা!”  সংক্রান্ত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে  মজুমদার এন্টারপ্রাইজ নিম্নোক্ত পত্রটি পাঠিয়েছে আজ ২৬ শে আগস্ট ২০২৩ , যেটি হুবহু  প্রকাশিত হলো: “জনাব মুজিব মাসুদ কর্তৃক প্রণয়নকৃত সংবাদের ১১ পৃষ্ঠার ৪র্থ কলামের ৫ম প্যারায় ও ৫ম কলামের ৬ষ্ঠ প্যারায় মজুমদার এন্টারপ্রাইজকে লোকাল এজেন্ট হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ একই পৃষ্ঠার ৪র্থ কলামের ৪র্থ প্যারায় বলা হয়েছে – “কাজ দেওয়া হয়েছিল মজুমদার এন্টারপ্রাইজ নামের কোম্পানিকে”।

এমনকি মাননীয় বিদ্যুৎ ও জ¦ালানী প্রতিমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে ১ম পাতার ২য় ও ৩য় কলামে জয়েন্ট ভেঞ্চারের কথা বলেছেন যা সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। পুরো সংবাদ পড়ে এটার কোনো সত্যতা পাওয়া যায় না। অথচ আপনাদের প্রকাশিত সংবাদের উল্লেখিত ১১ পৃষ্ঠার ৪র্থ কলামের ৫ম প্যারায়, ৫ম কলামের ৬ষ্ঠ প্যারায় তা স্পষ্টভাবে বারবার বলা হয়েছে, মজুমদার এন্টারপ্রাইজ লোকাল এজেন্ট। ১১ পৃষ্ঠার ৪র্থ কলামের ১ম প্যারায় আমাদেরকে ৯১০ কোটি টাকার কাজ দেওয়ার যে মিথ্যা ও বানোয়াট বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে, তা স্বয়ং আপনারাই মিথ্যা প্রমাণ করেছেন ১১ পৃষ্ঠার ৫ম কলামের ৬ষ্ঠ প্যারায় মজুমদার এন্টারপ্রাইজকে লোকাল এজেন্ট হিসেবে উল্লেখ করার মাধ্যমে।

কারণ আপনারা সহ সংশ্লিষ্টরা জানেন, এ ধরনের উচ্চতর কারিগরি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য যে ধরনের যোগ্যতা ও দক্ষতার প্রয়োজন হয় তা মজুমদার এন্টারপ্রাইজ সহ বাংলাদেশের কোনো কোম্পানিরই নেই। সেজন্য এ ধরনের প্রকল্পে বাংলাদেশি কোম্পানির লোকাল এজেন্ট হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। কারিগরি ও আর্থিক মূল্যায়ন সহ যাবতীয় মূল্যায়নে লোকাল এজেন্টের কোনো ধরনের ভূমিকা কিংবা অংশগ্রহণের সুযোগ নেই।

যেহেতু বাংলাদেশের কোনো কোম্পানিই জয়েন্ট ভেঞ্চার করার উপযুক্ততা রাখে না, সেহেতু লোকাল এজেন্টের পক্ষে মূলতঃ বিদেশি কোম্পানির প্রতিনিধিত্ব করা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। সংবাদে ১১ পৃষ্ঠার ৪র্থ কলামের ৫ম প্যারায় মাননীয় প্রতিমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে আপনারা বলেছেন- “এবার মূলত দীঘিপাড়া ও বড়পুকুরিয়ার নতুন খনি উন্নয়নের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে মজুমদার এন্টারপ্রাইজের কোনো ভূমিকা নেই। এখানে তারা লোকাল এজেন্ট হিসাবে কাজ করছে।” অথচ আপনারা প্রথম পাতায় মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর উদ্ধতি দিয়ে জয়েন্ট ভেঞ্চার করে প্রতারণার কথা বলেছেন, যাহা সর্ববৈ মিথ্যা ও সাংঘর্ষিক। অর্থাৎ মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর এক উদ্ধৃতি দিয়ে আপনার বলেছেন – “সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে মজুমদার এন্টারপ্রাইজের কোনো ভূমিকা নেই” আবার আরেক উদ্ধৃতির মাধ্যমে প্রথম পাতায় বলেছেন – “জয়েন্ট ভেঞ্চার করার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছিল” যা সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ। আপনাদের মনগড়া এ ধরনের সাংঘর্ষিক উদ্ধৃতি ও তথ্য উপস্থাপন মাননীয় প্রতিমন্ত্রীকে হেয় প্রতিপন্ন করার শামিল, যা একইভাবে বাংলাদেশ সরকারের উন্নয়নকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে।

তাছাড়া আপনারা ৯১০ কোটি টাকার যে কাজের উল্লেখ করেছেন তা এডিবি’র অর্থায়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে। বিজিএফসিএল এখানে বাস্তবায়নকারী সংস্থা মাত্র। আপনাদের জানা থাকা উচিৎ এডিবি’র অর্থায়নে বাস্তবায়িত যেকোনো প্রকল্পে তাঁদের কনসালটেন্ট থাকে এবং কাজ শুরুর পূর্ব হতে এডিবি সবকিছুই সরাসরি তদারকি করে থাকেন এবং কাজের অগ্রগতি সাপেক্ষে এডিবি অর্থ ছাড় দেন।

ইউএসএ’র কোম্পানি টেকনোস্টিম-কে নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড (ঘঙঅ) দেওয়ার দুই মাস পর এই কাজ নিয়ে প্রশ্ন উঠাতে আমাদের দেশের গোয়েন্দা সংস্থা সহ বিভিন্ন সংস্থা এমনকি ম্যানিলায় অবস্থিত এডিবি হেড কোয়ার্টার হতে অফিস অব এন্টিকরাপশন এন্ড ইন্টিগ্রিটি (ঙঅও) কর্তৃক মজুমদার এন্টারপ্রাইজ সহ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক, বিজিএফসিএল ও বিদেশি কোম্পানি সহ সবাইকে দুই বছর ব্যাপী তদন্ত করেছেন, তাতে লোকাল এজেন্ট হিসেবে মজুমদার এন্টারপ্রাইজের কোনো ধরনের অপরাধের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়নি।

ফলে এডিবি মজুমদার এন্টারপ্রাইজকে কোনো ধরনের কালো তালিকাভুক্ত করেনি। উল্লেখ্য যে দৈনিক যুগান্তরে ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে প্রকাশিত নিউজের প্রতিবেদকও এই মুজিব মাসুদ। যেখানে তিনি মজুমদার এন্টারপ্রাইজকে লোকাল এজেন্ট হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। ঐ দিনের সংবাদপত্র পড়লে সহজেই তার সত্যতা মিলবে। রিপোর্টটিতে অন্য কোম্পানির বিরুদ্ধেও নাম এসেছে এবং ফিজিবিলিটি স্টাডি রিপোর্টটির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে যে কথা বলেছেন সেগুলো আমাদের দায়িত্ব ও আওতা বহির্ভূত। ফলে আমরা এ ব্যাপারে মন্তব্য করা সমীচীন নয় বলে মনে করি।

উদোর পিণ্ডি বুধোড় ঘাড়ে চাপাতে বিজিএফসিএল আমেরিকার টেকনোষ্টিমের বদলে আমাদেরকে সম্পূর্ণ বিধিবর্হিভূত অন্যায়ভাবে ২৫ মার্চ ২০২০ কালো তালিকাভুক্তি করে। ২৬ মার্চ ২০২০ হতে প্যানডামিকের জন্য দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করা হয়। প্যানডামিক স্বাভাবিক হয়ে আসলে আমরা মহামান্য হাইকোর্টে আপিল করি এবং মহামান্য হাইকোর্ট ২৭শে জুলাই ২০২২ তারিখে বিজিএফসিএল কর্তৃক কালো তালিকাভুক্তিকরণ সম্পূর্ণ অবৈধ বলে রায় দেন। যার রিট পিটিশন নং ৪০১২/২০২০।

আপনাদের সংবাদে বারবার বিভিন্নভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে আমাদেরকে কালো তালিকাভুক্ত বলা হয়েছে, যা আদৌ সত্য নয়। আপনাদের জানা থাকা উচিত, বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে সিপিটিইউ নামে একটা সংস্থা আছে, যার ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের সকল কালো তালিকাভুক্ত কোম্পানির নামসহ পুরো বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া থাকে। অনুরূপভাবে এডিবি’র ওয়েবসাইটেও ব্ল্যাকলিস্টেড কোম্পানিগুলোর নাম তালিকাভুক্ত আছে। এরকম সহজলভ্য একটা তথ্য যাচাই-বাছাই না করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমাদেরকে কালো তালিকাভুক্ত বলা তথ্য-আইনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। আমরা মনে করি, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থ উদ্ধার ও তাদেরকে খুশি করার উদ্দেশ্যে দৈনিক যুগান্তর এধরনের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য উপস্থাপন করেছে।

আমরা আরও মনে করি, সংবাদে মজুমদার এন্টারপ্রাইজ-এর মালিকের নাম ‘জসিম উদ্দিন মজুমদার’ উল্লেখ করে ও উনাকে চট্টগ্রামের যুবলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে দৈনিক যুগান্তর চরম অপেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছে। অথচ উনার প্রকৃত নাম মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন চৌধুরী এবং তিনি চট্টগ্রামের কোনো রাজনৈতিক সংগঠনে দায়িত্বশীল নয়। এ থেকেই বোঝা যায় প্রকাশিত সংবাদটি মোটেও কোনো অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ছিল না বরং এটি ছিল নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থ উদ্ধার ও তাদেরকে খুশি করার লক্ষ্যে মনোরঞ্জনমূলক একটি প্রতিবেদন।

আপনার সংবাদের ১১ পৃষ্ঠার ৪র্থ কলামে ২য় প্যারায় “উনি জানিয়েছেন বলে লিখেছেন” সেটাও সর্ববৈ মিথ্যা। প্রতিবেদকের সাথে জনাব মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন চৌধুরীর সাথে টেলিফোন, ই-মেইল, ওয়াটসঅ্যাপ বা অন্য কোনো মাধ্যমে কখনোই কোনো ধরনের কথা কিংবা যোগাযোগ হয়নি। ইতোমধ্যে কয়লাখনি ও পাথরখনি কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলে উনারাও অনুরূপভাবে প্রতিবেদকের সাথে কোনো কথা হয়নি বলে জানান এবং শীঘ্রই উনারা এ ব্যাপারে প্রতিবাদ দিবেন বলে জানান।

আমরা বিশ^াস করি, সাংবাদিক ও সংবাদপত্র জাতির বিবেক ও আয়না স্বরূপ। এরকম মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, পরিবারকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়। এমনকি এরকম ভিত্তিহীন মিথ্যা, বানোয়াট সংবাদ সব মানুষ সবসময় সমানভাবে গ্রহণ করতে পারে না। ফলে এ ধরনের মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ কখনো কখনো কারো কারোর জন্য আত্মহত্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

আশা করি আপনাদের এরকম মিথ্যা, বানোয়াট সংবাদ প্রত্যাহার করবেন এবং আমাদের পাঠানো অত্র প্রতিবাদ খানা দাড়ি, কমা, সেমিকোলনসহ কোনরূপ কাটছাট না করে অনুরূপভাবে আগামীকাল প্রথম পাতায় ছাপাবেন। অন্যথায় আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হব।

প্রতিবাদ প্রেরক

(ওয়াসিফুর রহমান)
মহাব্যবস্থাপক ও পিএস টু সিইও”