বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের বিবৃতি

ঢাকা, ২৮ ডিসেম্বর, (এনএসনিউজওয়্যার) — গত ২৪ ডিসেম্বর ২০১৩, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক জনাকীর্ণ সাংবাদিক সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপার্সন, জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ১৮ দলীয় জোট নেতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আগামী ৫ জানুয়ারীর প্রহসনের নির্বাচন বাতিলে সরকারকে বাধ্য করা এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে সারাদেশ থেকে সকল শ্রেণী-পেশার সক্ষম জনগণকে আগামীকাল রাজধানী ঢাকায় সমবেত হওয়ার জন্য যে ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসী’ কর্মসূচি ঘোষনা করেছেন তা বানচালে সরকারের অপকৌশল ও দেশব্যাপী সরকারের নির্দেশে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত বাড়াবাড়ির ফলে জনজীবনে সৃষ্ট নৈরাজ্য ও অস্থিরতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ এক বিবৃতিতে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, বিরোধী দলের যেকোন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে বানচাল করার লক্ষ্যে বর্তমান আওয়ামী ফ্যাসিষ্ট সরকার বরাবরের মতো এবারও আগামীকালের ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসী’ কর্মসূচিকে সামনে রেখে সারাদেশ থেকে আগত লক্ষ লক্ষ মানুষের জণ¯্রােতকে ঠেকাতে দেশব্যাপী বাস, ট্রেন, লঞ্চ ও সকল গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে রাজধানী ঢাকা গোটা দেশ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এমনকি জেলা শহর ও মহানগরগুলোকেও উপজেলা ও থানা থেকে যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে সেগুলোকেও বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। মনে হয় দেশব্যাপী যেন সরকারের অঘোষিত হরতাল বা ১৪৪ ধারা চলছে। সরকার প্রশাসনযন্ত্রের সাহায্যে অনির্দিষ্টকালের জন্য জনগণের বিরুদ্ধে নিজের্ইা অবরোধ সৃষ্টি করেছে। রাজধানী ঢাকার সকল আবাসিক ও খাবার হোটেলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তল্লাশীর নামে ভয়বীতি দেখানো হচ্ছে যাতে হোটেলে কোনো মানুষ প্রবেশ ও অবস্থান করতে না পারে। পাশাপাশি যৌথবাহিনীর মাধ্যমে সারাদেশে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের বাসায় বাসায় হামলা, বেআইনী তল্লাশীর নামে আসবাবপত্র ভাংচুর, বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেয়া, পরিবারের পুরুষ সদস্য ও মহিলাদের গ্রেফতার, অশালীন আচরণ এবং জুলুম-নির্যাতনের এক নজীরবিহীন ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে যা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। দেশী-বিদেশী মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতি আমাদের বিনীত প্রশ্ন-আর কত বড় ধরণের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলে তা আপনাদের দৃষ্টিগোচর হবে। তিনি বলেন, দেশের শতকরা ৯০ ভাগ মানুষের নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিকে অগ্রাহ্য এবং বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে আগামী ৫ জানুয়ারী যে প্রহসনের নির্বাচন সরকার অনুষ্ঠিত করতে যাচ্ছে তা সরকারের জন্য হিতে বিপরীত হবে মর্মে দেশের সুশীল সমাজ ও বিজ্ঞ নাগরিকদের মতামতকেও গুরুত্ব না দিয়ে যেভাবে ক্ষমতার দম্ভ দেখাানো হচ্ছে তার অশুভ পরিনতি কারো জন্যই কাম্য নয়। মির্জা ।অলমগীর বলেন, এখনও পর্যন্ত বিএনপি চেয়ারপার্সনের বাসভবন ও তাঁর গুলশানস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়সহ নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় সরকার কর্তৃক অবরুদ্ধ এবং নেতা-কর্মীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে যা একদলীয় ও ফ্যাসিষ্ট সরকারের গণতন্ত্রের বিকৃত নমুনা হিসেবেই জনগণ মনে করে।

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “গতকাল দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া পুনরায় দেশবাসীর উদ্দেশ্যে আওয়ামী শাসকের হাতে ধ্বংস হয়ে যাওয়া গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার পূণ:রুদ্ধারের স্বার্থে দেশের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে ঢাকায় আসার জন্য যে ডাক দিয়েছেন তা সফল করতে যেকোন বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমবেত হওয়ার জন্য উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি। জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস, জনগণের বিজয় অত্যাসন্ন।”